আইফোন (iphone)মুলত অ্যাপল কর্তৃক নির্মিত একটি স্মার্টফোন।বিশ্বজুড়ে মুঠোফোনের দুনিয়ায় রাজত্ব করছে টেক জায়ান্ট apple. এটি সর্বপ্রথম স্টিভ জবস ২০০৭ সালের ৯ জানুয়ারি প্রথম উন্মোচন করেন এবং ২৯ জুন সর্বপ্রথম বাজারে আসে। আইফোন মূলত আইপড, ফোন এবং ইন্টারনেট কমিউনিকেটরকে একত্রিত করে তৈরি করা হয়েছিল। বলা বাহুল্য এটি মাল্টি-টাচ ডিসপ্লে ব্যবহারকারী প্রথম মোবাইল ফোনগুলির মধ্যে অন্যতম। সময়ের সাথে সাথে, আইফোন আরও বড় ডিসপ্লে, ভিডিও রেকর্ডিং, ওয়াটারপ্রুফিং এবং বিভিন্ন এক্সেসিবিলিটি ফিচার যুক্ত করেছে।
প্রথম আইফোনটিতে ২জি কানেক্টিভিটি ছিল, যেখানে অন্যান্য স্মার্টফোন কোম্পানি যেমন ব্ল্যাকবেরি এবং নকিয়া ৩জি কানেক্টিভিটি অফার করছিল। মজার ব্যাপার হচ্ছে আইফোন 8 এবং 8 প্লাস পর্যন্ত, আইফোনের সামনে একটি বোতাম ছিল এবং টাচ আইডি ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর যুক্ত করা হয়েছিল।
অ্যাপল আইফোন তৈরীর ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস এবং গ্রাফিক ডিজাইনার রব জ্যানফের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
আইফোন বর্তমান বিশ্বে অন্যতম তুমুল জনপ্রিয় একটি মোবাইল ফোন ব্র্যান্ড। বর্তমানে iphone এ রয়েছে আকর্ষণীয় সব features এবং অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তি।আইফোন এর নতুন মডেলের অপেক্ষায় থাকেন পৃথিবীর কোটি কোটি প্রযুক্তিপ্রেমী।
বছরে মাত্র কয়েকটি সংস্করনের মুঠোফোন বাজারে আনলেও মুহুর্তেই শেষ হয়ে যায় স্টক।ফলে নতুন মডেলের ফোন পেতে apple এর store এর সামনে দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে কেন এত জনপ্রিয় আইফোন?বাজারে থাকা অন্যান্য মোবাইল ফোনের দামের সাথে তুলনা করলে বিস্তর ফারাক দেখা যায়,এর পরও আইফোন কেনার জন্য সবাই কেন হুমড়ি খেয়ে পড়ে?
তাই আজ আমরা আইফোন এর জনপ্রিয়তার কারণগুলো খুজে বের করব-
আইফোনের অনন্য নকশা: মূলত আইফোনের অনন্য নকশা আর অভিনবত্বের কারণে যেকোনো মুঠোফোন থেকে খুব সহজেই আইফোন চিনে ফেলা যায়।তাছাড়া এর রয়েছে নজরকাড়া চাকচিক্য ও ডিজাইন। শুধুমাত্র একটি বাটন দিয়ে মেইন মেন্যুতে প্রবেশ করা যায়।এছাড়া আইফোনের গ্রাফিকস ইন্টারফেস অর্থাৎ ফোনে প্রবেশ করে যেসব অভিজ্ঞতা একজন গ্রাহক নিতে পারে সেটা অন্য যেকোনো ফোনের চেয়ে আলাদা।এছাড়াও ফোনটি কিভাবে চলছে বা চলবে তার উপরও বিশেষ নজর দেয় apple.এর ফলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে ফোনটি প্রযুক্তিপ্রেমীদের মন জয় করে নেয়।
সফটওয়্যার : আইফোনের সফটওয়্যার পলিশড ও খুবই স্মুথ। iPhone এর সফটওয়্যার হিসেবে ব্যবহৃত হয় iOS, যা অ্যাপল নিজেই তৈরি ও নিয়ন্ত্রিত করে।
iOS খুবই নিরাপদ, দ্রুত এবং ইউজার-ফ্রেন্ডলি ইন্টারফেস প্রদান করে।ফলে এক অনন্য অভিজ্ঞতা পান ব্যবহারকারী। অন্য ব্র্যান্ড ইউজার মানুষের কাছে apple এর এমন ডিজাইন ল্যাংগুয়েজ মুগ্ধতার প্রতীক বলা যায়।
সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা : ডিজিটাল এ যুগে প্রায়ই ব্যক্তিগত তথ্যসহ অনেক অনেক গোপনীয় তথ্য সহজেই সামাজিক মাধ্যমসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়।তবে মজার ব্যাপার হল একজন iphone ইউজার এর তথ্য হাতিয়ে নেওয়া খুব একটা সহজ কাজ নয়।apple বরাবরই নিজেদের প্রোডাক্টের নিরাপত্তা ইস্যুতে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেয়।একজন হ্যাকার ইচ্ছা করলেই খুব সহজে আইফোন ব্যবহারকারীর তথ্য হ্যাক করতে পারেন না।
অপারেটিং সিস্টেমে নতুনত্ব ও চমক: iPhone-এর অপারেটিং সিস্টেম iOS-এর নতুনত্ব বজায় রেখে চলেছে।প্রতি আপডেট এবং মডেলে iphone তার স্বকীয়তা বজায় রাখে। iOS-এ এখন AI-ভিত্তিক ফিচার যুক্ত হয়েছে, যেমন স্মার্ট সার্চ ও প্রেডিক্টিভ টেক্সট।নতুন আপডেটে রয়েছে উন্নত প্রাইভেসি কন্ট্রোল ও অ্যাপ ট্র্যাকিং ট্রান্সপারেন্সি।ব্যবহারকারীরা এখন কাস্টম লকস্ক্রিন ও হোম স্ক্রিন ডিজাইন করতে পারেন।iCloud-এ আরও স্মার্ট ব্যাকআপ ও ফাইল শেয়ারিং সুবিধা যুক্ত হয়েছে।ফলে ব্যবহারকারী পাবেন অসামান্য এক অভিজ্ঞতা।
apple ইকোসিস্টেম : iPhone-এর ইকোসিস্টেম অ্যাপলের সবচেয়ে বড় শক্তিগুলোর একটি। এটি একসঙ্গে কাজ করে এমন ডিভাইস ও সেবা দিয়ে একটি ক্লাসিকাল অভিজ্ঞতা তৈরি করে। iPhone, iPad, Mac ও Apple Watch একসঙ্গে কাজ করে; যেমন ফোনে কল এলে Mac থেকে রিসিভ করা যায়।এছাড়াও iPhone থেকে অন্য Apple ডিভাইসে দ্রুত ও সহজে ফাইল শেয়ার করা যায়।এছাড়া iclouds এ সব ডিভাইসে ডেটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সিঙ্ক হয়, যেমন ছবি, কনটাক্টস, নোট।
সত্যি কথা বলতে iphone অনেকের কাছে এক ইমোশনের নাম।শুধু ইয়াং জেনারেশন নয়,প্রাপ্তবয়স্করাও apple এর প্রোডাক্টসের ভক্ত শুধু এর ফিচার এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এর কারনে। apple এর প্রোডাক্টগুলো যেন দিনকে দিন নিজেকেই ছাড়িয়ে যাচ্ছে।প্রযুক্তিগত ব্যালেন্স আর স্মুথ ফ্রেন্ডলি ইউজের কারনে apple এখনো নি: সন্দেহে অন্যতম সেরা ব্র্যান্ড হিসেবেই থাকবে।