আমরা অনেকেই ফেসবুক ব্যবহার করি শুধু বন্ধু, পরিবার বা পরিচিতদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য। কিন্তু এখন ফেসবুক শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়, এখান থেকে আয় করারও সুযোগ আছে। আগে শুধু বড় পেজ চালালেই আয় করা যেত। এখন চাইলে ব্যক্তিগত আইডি থেকেও আয় করা সম্ভব।
সবাই কি আয় করতে পারবেন?
আগে নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হতো যেমন বেশি অনুসারী ও নির্দিষ্ট সংখ্যক ভিউ। এখন নিয়ম কিছুটা সহজ হয়েছে। ব্যক্তিগত আইডিকেও আয় করার জন্য ব্যবহার করা যায়। তবে এজন্য আইডি প্রফেশনাল মোডে নিতে হয়।
তবে শুধু প্রফেশনাল মোড চালু করলেই আয় হবে না। ফেসবুক থেকে বিশেষ ইনভাইটেশন (আমন্ত্রণ) পেতে হয়। নোটিফিকেশন বা ইমেইলে জানানো হয়। সেই আমন্ত্রণ পেলে ধাপে ধাপে সেটআপ করে আয় শুরু করা যায়। ভবিষ্যতে নতুন নিয়ম যোগ হতে পারে বলেও জানা গেছে।
প্রফেশনাল মোড চালু করার নিয়ম
১. ফেসবুক অ্যাপে লগইন করুন।
২. নিজের প্রোফাইল পেজে যান।
৩. ওপরে তিন ডট মেনুতে চাপুন।
৪. সেখানে “Turn on Professional Mode” সিলেক্ট করুন।
৫. নির্দেশনা অনুযায়ী “Continue” চাপলেই কাজ শেষ।
কোন কনটেন্ট থেকে আয় হয়?
ফেসবুকে প্রায় সব ধরনের কনটেন্ট দিয়েই আয় করা যায়। যেমন:
ছবি
স্টোরিজ
রিলস ভিডিও
সাধারণ টেক্সট পোস্ট
অনেকে এখন স্টার মনিটাইজেশন ব্যবহার করছেন। এখানে ফলোয়াররা নির্মাতাকে “স্টার” দিয়ে সাপোর্ট করতে পারেন। ভিডিওর ক্ষেত্রে ইন-স্ট্রিম বিজ্ঞাপন দেখিয়ে আয় ভাগাভাগি হয়। আর টেক্সট, ছবি ও স্টোরিজে প্রতি চারটি কনটেন্টের পর বিজ্ঞাপন দেখানো হয়, সেখান থেকেও আয় আসে।
ফেসবুকের আয়ের নিয়ম
ফেসবুক আয় ভাগ করে কয়েকটি মাপার নিয়মে:
CPM: প্রতি হাজার ভিউতে আয়।
CPC: বিজ্ঞাপনে ক্লিক হলে আয়।
CTR: বিজ্ঞাপনে ক্লিকের হার যত বেশি, আয় তত বেশি।
মনিটাইজেশনের পর দরকারি টুল
ব্যক্তিগত আইডির জন্য প্রফেশনাল ড্যাশবোর্ড
পেজের জন্য মেটা বিজনেস স্যুইটস
পেজে একাধিক মানুষকে কাজ ভাগ করে দেওয়া যায়, কিন্তু ব্যক্তিগত আইডিতে তা সম্ভব নয়।
কনটেন্ট আপলোডের নিয়ম
আয় করতে হলে নিয়মিত কনটেন্ট দিতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রতিদিন ৫–৭ ধরনের কনটেন্ট যেমন ছবি, ভিডিও ও স্টোরিজ দেওয়া উচিত।
সময়ও গুরুত্বপূর্ণ। শুক্রবার সকালে ও অন্যান্য দিনের সন্ধ্যায় বেশি ভিউ আসে। রোজার সময় সাহরির সময়েও ভালো ভিউ পাওয়া গেছে।
কোন কনটেন্টে বেশি আয়?
সব কনটেন্ট থেকে আয় হলেও স্টোরিজ থেকে তুলনামূলক বেশি লাভ পাওয়া যায়। কারণ এতে খরচ ও সময় কম লাগে। তবে শুধু স্টোরিজের ওপর নির্ভর করলে গ্রোথ কমে যেতে পারে। তাই ছবি, ভিডিও, টেক্সট সব ধরনের কনটেন্টই দিতে হবে।
যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে
#অশ্লীল, সহিংস বা ঘৃণামূলক কনটেন্ট আপলোড করা যাবে না।
#অন্যের মিউজিক ব্যবহার করা ঠিক নয়, এতে কপিরাইট সমস্যা হতে পারে। নিরাপদ উপায় হলো ফেসবুকের মিউজিক লাইব্রেরি ব্যবহার করা।
#ভাষা ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে। ভুল শব্দ ব্যবহার করলে ফেসবুক সেটিকে “হেট স্পিচ” ভেবে স্ট্রাইক দিতে পারে।
পেজ ভালো নাকি ব্যক্তিগত আইডি?
যারা কনটেন্ট ক্রিয়েশনকে পেশা বানাতে চান, তাদের জন্য পেজই ভালো। কারণ আইডির রিচ সীমিত, কিন্তু পেজের কোনো সীমা নেই।
এ ছাড়া আয় বাড়াতে হলে একটি নির্দিষ্ট বিষয় (নিশ) বেছে নিয়ে নিয়মিত কনটেন্ট দিতে হবে। এতে অডিয়েন্সের কাছে পরিচিতি তৈরি হবে।
হালকা মেজাজের কনটেন্ট, কৌতুক বা মজার পোস্ট সাধারণত বেশি ভিউ পায়। তবে অবশ্যই নিয়ম মেনে চলতে হবে।