জেনে অবাক হবেন যে,বিজ্ঞানীরা তৈরি করেছেন নতুন এক যুগান্তকারী উদ্ভাবন রোবোটিক(Robot Skin) , যা মানুষের চামড়ার মতোই স্পর্শ, তাপ এবং ক্ষতির অনুভব করতে পারে!কি অবাক লাগছে?
চলুন তাহলে সহজ ভাষায় জেনে নিই এই রোবোটিক চামড়াটি (Robot Skin)ঠিক কীভাবে কাজ করে, কেন এটা এত গুরুত্বপূর্ণ, এবং ভবিষ্যতে এর কী কী ব্যবহার হতে পারে।
জেল-ভিত্তিক রোবোটিক স্কিন (Robot Skin)মানুষের মতো অনুভব করে! কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এমন একটি কম খরচের, জেলাটিন-ভিত্তিক রোবোটিক চামড়া(Robot Skin) উদ্ভাবন করেছেন, যা স্পর্শ, তাপমাত্রা ও আঘাত বুঝতে পারে। অর্থাৎ, এই চামড়া একটি রোবট বা কৃত্রিম হাতকে মানুষের চামড়ার মতো অনুভব দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।এই “চামড়া” দেখতে নরম ও লচকদার, এর মধ্যে থাকে একটি একটানা পরিবাহী স্তর (conductive layer)। এর উপর যখন-হালকা ছোঁয়া দেওয়া হয়, তাপমাত্রা বাড়ানো হয়, অথবা কেটে ফেলা হয়, তখন এর ভিতরের ছোট ছোট ইলেকট্রিক সিগন্যালের পথগুলো পরিবর্তিত হয়।অর্থাৎ সিগনালের মাধ্যমেই এটা বুঝতে পারে বাহ্যিক পরিস্থিতি। এই পরিবর্তনগুলোই বলে দেয়, কী ধরনের স্পর্শ বা আঘাত লেগেছে।
AI কীভাবে সাহায্য করে? এই চামড়ার ভেতরে প্রায় ৮.৬ লাখ মাইক্রো-চ্যানেল থেকে সিগন্যাল আসে।
এই সিগন্যালগুলো মিলিয়ে তৈরি হয়েছে ১.৭ মিলিয়নের বেশি ডেটা পয়েন্ট।
এগুলো দিয়ে মেশিন লার্নিং মডেল প্রশিক্ষণ পায়, যাতে স্কিন নিজেই বুঝতে পারে কোনটা চাপ, কোনটা তাপ, আর কোনটা কাটা!
গবেষকরা একটি মানুষের হাতের মতো আকৃতির ছাঁচে এই জেল ঢেলে রোবটিক হ্যান্ড তৈরি করেন। এরপর তারা:
• হিট গান দিয়ে গরম করে,
• আঙুল ও রোবটিক হাত দিয়ে চাপ দেয়,
• এমনকি ধারালো ছুরি দিয়ে কেটে দেয়।
এসব চরম পরীক্ষায়ও স্কিন কাজ করেছে ঠিকঠাক! এটি বিভিন্ন আঘাত সঠিকভাবে শনাক্ত করতে পেরেছে।
এই স্কিন ভবিষ্যতে ব্যবহার হতে পারে:
• হিউম্যানয়েড রোবট – যাতে রোবট বুঝতে পারে, তাকে কেউ আদর করছে নাকি ধাক্কা দিচ্ছে।
• কৃত্রিম হাত বা পা (prosthetics) – যেন অঙ্গ হারানো মানুষও আবার স্পর্শের অনুভব পেতে পারেন।
• চিকিৎসা রোবট – যারা রোগীদের নরমভাবে ধরতে বা স্পর্শ বুঝে কাজ করে।
• এই জেল-ভিত্তিক রোবোটিক স্কিন(Robot Skin) ভবিষ্যতের রোবটিক্স ও কৃত্রিম অঙ্গ প্রতিস্থাপন প্রযুক্তিতে একটি বড় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। মানুষের মতো অনুভব দিতে পারা রোবট বা প্রোস্থেটিক ডিভাইস কল্পবিজ্ঞানের বিষয় ছিল একসময়, কিন্তু এখন তা বাস্তব হতে শুরু করেছে।
• এক পাতলা শীট, অনেক অনুভব – প্রযুক্তি আবারও প্রমাণ করে, মানব অনুভব কেবল মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়।
প্রযুক্তির ক্রমাগত অগ্রগতিতে এগিয়ে চলছে বিশ্ব।ফলে নিত্যনতুন আবিষ্কার লক্ষ্য করা যাচ্ছে,জেল ভিত্তিক রোবটিক স্কিন(Robot Skin) বিজ্ঞানের এমনই একটি আবিষ্কার যা সত্যিকার অর্থেই প্রশংসনীয়। নতুন নতুন আবিষ্কার মানব সভ্যতাকে প্রতিনিয়ত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
বিজ্ঞান আমাদের জীবনকে সহজ ও আরামদায়ক করে তুলেছে।
এনার্জি, চিকিৎসা, যোগাযোগ থেকে শুরু করে সবখানেই বিজ্ঞানের ছোঁয়া স্পষ্ট।
বিজ্ঞান ছাড়া আধুনিক জীবন কল্পনাই করা যায় না।
তাই বিজ্ঞানের প্রতিটি আবিষ্কার আমাদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।